Thursday, December 17, 2009

সেই ঘর

কেমন সেসব দিন ছিল সব

বাসটা থেমে একপা দু’পা

এগিয়ে গেলে

এ’মোড় বা’য়ে, ও’মোড় ডা’নে

শেষের মোড়ে একদৌড়ে

ছয়তলাতে পৌছে যেতাম ঘর।


এখন কেমন বাস থামে যে

পা চলেনা, চলেনা পা, চোখ দেখেনা দেখেনা আর

আটকালো পথ শরত্‍দিনের শুকনো পাতায়, পাতায় পাতায়

সবতো আছে, সেই যেন নেই,

শুধু

ঘরের ভিতর পর।


২০০৫/১১/০৫

মনে আছে?

বৃষ্টির পথে, এইতো সেদিন, রোদের আকাশে,

মনে পড়ে,

তুমি আমি একা একা দুরন্ত বাতাসে,

উড়ে উড়ে

চলেছিলাম সে কোন যেন বসন্ত বিলাসে,

মনে পড়ে?

সোঁদা মাটি, সেইতো এদিন, বিজলী প্রবাহে,

মনে আছে,

মনুবৌ, কত জীবনের কত দুঃসহ মিলন বিরহে

তবু কাছে

মিলেছিলাম সেতো সেই আমাদেরই বিবাহে,

মনে আছে?

২০০৫/১১/০৯

মনুবউ

মনের মাঝে রাঙা পায়ের

নুপুর বাজে তার,

----------------

বসন্তের এই তারার রাতে

উড়েই চলি তার সাথে।

২০০৫/১১/১১

চাওয়া

রাত শেষ হোক তব মোর প্রণয় সম্ভাষণে

বেলা বয়ে যাক তব মোর সাথে সঙ্গোপনে

আলো হোক দিন তব মোদেরই মধুর মিলনে।

বক্ষ উঠুক উদ্বেলিয়া সিক্ত প্রেমের চুম্বনে

স্বত্তা মোদের পূর্ণ হউক সম্মিলনের ক্ষণে

রিক্ত জীবন ভরিয়া উঠুক বিরহের অবসানে।

২০০৫/১১/১৫

সে বলেছিল

যত ঘুম তুমি ঘুমাবে, ততটুকু তুমি মৃত

চোখ খোলো, সে বলেছিল...


যত স্থির গন্তব্য তোমার, ততটাই তুমি ভ্রান্ত

পথ ভোলো, সে বলেছিল...


যতদূর যাবে তুমি, ততদূরই শুধু পথ

হেটে চলো, সে বলেছিল...


যত দীর্ঘ মধ্যাহ্ন হ্রস্বছায়া, ততই তুমি রৌদ্রস্নাত

তবেই আলো, সে বলেছিল...


মনে আছে সে বলেছিল, যেন না নামে অন্ধকার সন্ধ্যার অবকাশে

দ্রুতপায়ে থেকো তুমি সৌররশ্মি পথে অনুক্ষণ আলোক-সকাশে।


সে যে কে মনে নেই আজ আর, ভুলে গেছি কে যে সে

মনে আছে অপথের এই পথে চলা শুধু নিরুদ্যেশে।


২০০৫/১১/২৬

কেমন আছি?

কেমন আছ?

মাধুকরী বেশ মলিন চিত্র

শেষের বেলার শূণ্য পাত্র

যেমন থাকে।

কেমন আছি?

ছন্ন জীবন ছিন্ন পত্র

জল শুকানো জলসত্র

তেমনই আছি।

২০০৫/১২/১৩

সতের বছর

কাটল সময় সতের বছর

জোয়ার ভাটার নানান রঙ্গে

উথাল পাথাল অকুল সাগর

আমার জীবন তোরই সঙ্গে।


ইচ্ছা করিস আবার যদি

তোরই সঙ্গে অষ্টপ্রহর

ভালবাসায় নিরবধি

কাটাব ফিরে সতের বছর।


২০০৫/১২/৩১

এ জীবন

এ জীবন পাহাড়ি নদী চঞ্চলা,

কত ঘন অরণ্য

নেচে ফেরে

দুই ধারে

শুধু তোমারই জন্য

অকারণ লাস্যময়ী সারাবেলা।


এ জীবন ধীরস্রোতা শান্তমতি,

ঘুরে নগর প্রান্তর বন উপবনে

দুরের গা'য়ে

তোমায় নিয়ে

ঘর গোছানোর আয়োজনে

স্বপ্ন বোনায় মগ্নধারা জলবতী।


২০০৬/০৩/০২

১৩ই জানুয়ারী

আজ এই ১৩ই জানুয়ারী

স্বপ্নস্মৃতির পিছু পিছু,

বলবে কি তুমি কিছু

যদি হাতে হাত ধরি?


বর্ষশুরুর জানুয়ারীর তের

১৭ বছর হাতে হাত হেটে হেটে

যদি ঠোট রাখি ঠোটে

বলবে কি কিছু আরো?


ত্রয়োদশী এই দিবসে জানুয়ারীর

অনাদি তৃষ্ণা কামনা অগ্নিমুখী

বলবে কি কিছু যদি রাখি

শরীরে তোমার আমার শরীর?


২০০৬/০১/১৩

কি আসে যায়

মাসকাবারে বেতন হবে

খাতাকলমের গর হিসাবে

দুচার মাস নয় দেরীই হবে

জানি বছরখানেক বাকিই রবে

গেল নাহয় মারই যাবে

কি ই বা তাতে আসবে যাবে?


২০০৬/১১/১০

কোনদিন কেউ যদি

কোনদিন কেউ যদি মজে যায় অল্পতে

ভালোবেসে কাছে আসে হাসি আর গল্পতে,

বসতে দিওনা তারে হৃদয়েতে টুল পেতে

সোজাসুজি বলে দিও এসেছে সে ভুল পথে।


--------

১৯৮৮, দিন তারিখ মনে নেই

Friday, December 11, 2009

বাবা

নদীর জলে সময় গড়ায়, অমোঘ অহ্নগতি

আসে সেই দিন ফিরে আবার বছর প্রতি

ভুলে যাওয়া স্বরে ডাকে, সে স্মৃতি অসহ

‘কেমন আছিস বাবা, বড় হ, মানুষ হ’।


সময় জলে জীবন গড়ায়, ভালোই আছি

যত বড় হই, যত মধু সঞ্চয়ে এই মানুষ মৌমাছি

রক্তের কোষে সেই স্বর শুধু একটি প্রতীক্ষা

ফিরে কি পাব একদিন সেই কন্ঠস্বরের দেখা?


অগাস্ট ২৫, ২০০৮

কবিতার সাথে

সেই শুরু, সেই প্রথম প্রেমের বোধ

হাতে হাত রাখা, সেই স্পর্শের বিনিময়

হাটা পথ সেই, শীতের সকাল, নরম রোদ

সেই শুরু, সেই কবিতার সাথে পরিচয়।


না দেখার কাল, না শেষের বেলা

না কোনো মেঘ, শুধু একাকী যক্ষ

বিরহ অনলে সেই আনমনে খেলা

ফিরে আসা সেই, কবিতারই সাথে সখ্য।


নিশি অবসান, হল বিরহ বিলীন

বহু প্রতীক্ষায় সেই অসহ প্রণয়

সেই ডানা মেলে ওড়া, মিলনের দিন

ঘুরে ফিরে সেই কবিতারই কাছে প্রশ্রয়।


ঘোরে কালচক্র, জীবন উ‌ৎস ছিন্ন

হৃদয়ের লেনদেন, কিসে তবে পরিশোধ

শেষ হোক এই একাকী দীর্ঘ অগুনন অপরাহ্ন

চিরচেনা সখা, কবিতার কাছে অনুরোধ।


২০০৭/০৯/০২

দুটি চোখ শুধু

দুটি চোখ শুধু ভেসে থাকে দুই চোখে

দুটি চোখ শুধু অন্ধকারে ক্রমশঃ উজ্জ্বলতর

মেঘাক্ত আকাশে সব নিভে যায় একে একে

সূর্যের রেখাগুলো কৃষ্ণ বিষন্নতায় যখন

দুটি চোখ শুধু চোখে নিয়ে অন্ধ আমি।


ক্ষীয়মান দৃষ্টি নিয়ে ডুবে যাই ডুবে যাই

কোথাও কি কথা ছিল ডুবব আমি, ছিল কথা কোনদিনও?

তবু দুটি চোখ আরো কৃষ্ণ কৃষ্ণতর।


মেঘ নিংড়ে আসে জল ফোটায় ফোটায়

দুটি চোখে সেই জল টলটল নারী তুমি

আর দুটি চোখ নিয়ে এই দুটি চোখে অন্ধ আমি।

১২/০৩/১৯৮৯

Tuesday, December 8, 2009

মনুবৌ

তোমায় মগ্ন রঙের খেলায়

অশেষ লগ্ন জন্ম বেলায়

জীবন মেলায় তোমার সঙ্গে

দিন যেন যায় অঙ্গে অঙ্গে

-----------------

১৫ই মে, ২০০৮

আগুন-পোকা

রাতের গভীরে আলো তার আধখানা দেহ নিয়ে ছেয়ে আছে অন্ধকারে যখন

বেরিয়ে ছিটকে আসি, যেতে চাই ডানা আর ছ’টি পদ নিয়ে চলে যাব

আগুন যেথানে নিজেই নিজেতে জ্বলে, দাউদাউ জ্বলে দাবানল

বন্ধ দরজা জানি খুলে যাবে সরসর যদি যাই আমি যেতে পারি ওইখানে।

সময়ের কৃষ্ণরূপ তবু গাঢ় ক্রমে গাঢ়তর, যেতে মানা, নেই তো যাওয়ার রীতি

রীতি? রীতি তো মৃতের নয়, মৃত পতঙ্গ আমি, শুধু চাই শুধু চাই পুড়ে হতে ধুলোছাই।

-------------------------------------------------------

(জানুয়ারি ১০ অথবা ১১, ১৯৮৯)