Thursday, February 24, 2011

দ্রোহ

নতুন উৎসের প্রয়োজন

জীবনের জন্য।

কোন নক্ষত্র নেই

দূরে কিংবা কাছে

শূণ্য বিবরে।


পথ আছে – নিজেরাই হতে পারি

হয়ে যেতে পারি অনির্বান উৎস

হৃৎপিন্ড জ্বালিয়ে যদি দিই।


পৃথিবী নক্ষত্র হয়ে

নিজেই নিজেকে বাচিয়ে রাখবে

যদি প্রতি বনানীতে জ্বালাই আগুন

দাউদাউ দাউদাউ।

১৯৯০

অমা

ক্রম প্রসারমান বিশ্বে

বস্তুকণা দূর দূরতর অবস্থানে

ছড়ায় যখন

ভাবনা আসে -

পৃথিবী পিঠের পরে

মানবের

এবং মানব সভ্যতার বোঝা নিয়ে

প্রায় সম্ভাবনাহীন জটিল বিন্যাসে এখানে এখানো

সময় এবং স্থানের সীমানা

অতিক্রম করে

ফুলের সুবাস

ও সুর্যের আলো

এসে পড়ে।


ভবিষ্যতে আসবেনা।

কারন রক্তিম গোলকটা

এখনি প্রায়ান্ধকার মনে হয়;

এতদূর চলে গেছে।

১৯৯০

নতুন কিছুই সৃষ্ট হয়না

নতুন কিছু সৃষ্ট হয়না,

নতুন কিছুর সৃষ্টি হয়না।

প্রত্ন-প্রাচীরে এক ভঙ্গীমা,

প্রত্ন-প্রাচীরের একই উন্নতি,

সমস্ত অতীত বর্তমান


দেওয়ালে উঠেছে শ্যাওলার ঝাঁপ

দেওয়ালে শ্যাওলা- স্থবির জড়তা

প্রানের অচল ধূসরায়তন।


জমেছে দৃষ্টি চোখের ক্লান্তি

জমেছে জমেছে

প্রাচীন দীঘির সবুজ জলের ঘোলা বদ্ধতা

ইটে শ্যাওলায় ইটের বিভেদে।

প্রতিদিন জমা স্তূপে ভিড়

নিয়ত অগণ্য ইতিহাস খোঁজা

অন্ধ ঝাঁকের জীব।


ঘোলা জল ঘোলা, জল ঘোলা জল


ঘোলা জলে জলে, প্রান খোজে জড়

সচেতনতার মর্গ পতাকা

ফেলে চলে আসি

কিছু রেখে আসি?

ঐতিহ্য কি?


হতাশার শিস বাতাসে বিস্মরণে

বেহুলা মাতিস একসাথে জলে।

ঘোলা জল ঘোলা।

ঈগলের ডানা ঝাপটানো সুখে – তৃতীয় রাইখ -

ওপাশে ফনার উত্তোলন।

কি করে বুজি এ’চোখ?

এই বয়ে চলি এইতো কেবলি

এটুকু বয়েছি এতদিন।


স্থানু বট

সনাতন বট

কিশলয় বট মূহুর্তে মুহুর্তে।

প্রত্ন-প্রাচীরে একই দৃশ্য।


নতুন কিছুই সৃষ্টি হয়না,

নতুন কিছুর সৃষ্টি হয়না।

ইট খসে পড়ে সময়ে সময়ে নিরব দ্বিপ্রহরে

ধ্বসিত অংশ আবদ্ধ বৃত্তে

জ্যামিতি-বন্দী প্রত্ন-প্রাচীর।


জড় ভিত্তিতে পরমৃত শৈবাল

জড় আয়তনে উদ্গত অনুক্ষন

বৃদ্ধ স্থানু, সনাতন বট-

পিতামহ দেখেছিল।

তারও পিতামহ? তারাও তবে?


নতুন কিছুই সৃষ্ট হয়না

নতুন কিছুর সৃষ্টি হয়না।

পুরনো ইট পুরনো রীতিতে খসে ধ্বসে পড়ে

পুরনো জ্যামিতিক বিন্দুতে বিন্দুতে

অতি পুরাতন আয়তবদ্ধে

১৯৯০

Monday, February 21, 2011

আংশিক অনুবাদ - T. S. Eliot - The Rock

স্বর্গের শীর্ষে ওড়ে, ওড়ে সে ঈগল
বৃত্তপথে ধায় তারে নিষাদ শিকারিদল।

অধিষ্ঠীত নক্ষত্রের হে অনন্ত পরিক্রমণ,
দৈবনির্দিষ্ট ঋতুমালার হে অমোঘ আবর্তন,

বসন্ত-শরৎ, জনন ও জরার হে বিশ্ব-বারিধি
মনন চিন্তা ধৃতি - যজ্ঞ কর্ম কৃতি, চক্র নিরবধি

অনন্ত উদ্ভাবন, অভিক্রিয়া অক্ষয়,
গতির বৈদগ্ধ্য আনে, স্থৈর্য্যের প্রজ্ঞা নয়;

বাণীর সিদ্ধি কেবল, সে নয় নৈঃশব্দ অন্তর্গত;
অক্ষরজ্ঞান মাত্র, সাথে অজ্ঞতা অক্ষরপ্রসূত।

আমাদের সমস্ত জ্ঞান ধায় মুঢ়তার অভিলাষে,
আমাদের মুঢ়তার গন্তব্য আমাদেরই মৃত্যুসকাশে,

জানি মৃত্যু-নৈকট্য তবু নয় নৈকট্য নিরঞ্জনে।
কোথায় সে প্রাণ যা আমরা হারালাম যাপনে?

সে অভিজ্ঞা কোথায় যা আমরা হারালাম জ্ঞানসঞ্চয়ে?
কোথায় সে প্রজ্ঞা যা আমরা হারালাম তথ্যের ভান্ডারে?

কালচক্র আবর্তমান বিংশ শত বর্ষ ব্যাপ্ত
ঈশ্বরেরই বিসরনে আমরা ক্রমেই ধুলিকালিপ্ত।

২০১১/০২/২০

The Eagle soars in the summit of Heaven,
The Hunter with his dogs pursues his circuit.
O perpetual revolution of configured stars,
O perpetual recurrence of determined seasons,
O world of spring and autumn, birth and dying
The endless cycle of idea and action,
Endless invention, endless experiment,
Brings knowledge of motion, but not of stillness;
Knowledge of speech, but not of silence;
Knowledge of words, and ignorance of the Word.

All our knowledge brings us nearer to our ignorance,
All our ignorance brings us nearer to death,
But nearness to death no nearer to GOD.
Where is the Life we have lost in living?
Where is the wisdom we have lost in knowledge?
Where is the knowledge we have lost in information?
The cycles of Heaven in twenty centuries
Bring us farther from GOD and nearer to the Dust.

দূরবর্তিনী

সমুদ্র এখানে শেষ

রক্তের উত্থানে শুধু

তটবর্তী বিস্তীর্ণ তোমার বেলাভূমি জুড়ে

রক্তিম স্থিতিতে জাগে

তীক্ষ্ণ শিলামুখ।

আঘাতে আঘাতে নিমগ্ন পূর্ণ্যাথী।

এই শেষ স্নান পৃথিবীর শেষ তীর্থে

এই।


বৃত্তবদ্ধ জল নিঃশোষিত।

তারপর – তারপর –

তোমাতে নতুন স্নান,

শীর্ণ নদীর ধারায়,

বেহুলার যাত্রা পথে ইন্দ্রের সভায়।


এ সমুদ্র –

তোমাতেই উৎস

সমাপ্তি তোমাতে।

অঝোর বর্ষণে প্রতিহত আমি শুধু

স্নায়ুতে, মস্তিষ্কে, হৃদয়ে পৌছানো যায়না যায়না।

ভালোবেসে আরো ভালোবেসে

ছোঁয়াতো গেলনা তথাপি কখনো

দীপ্ত স্ফটিক বিন্দু

সে’ অনন্ত জলের গভীরে।

উৎসতম উৎসে

মগ্ন প্রান্তে তার অবস্থান।


অশেষ বর্ষণে আমি প্রতিহত।

প্রতিহত আমি

নিজস্ব নীল অনুভবে।

অনুভবের সারাংশ সীমানায়

এই উপলদ্ধি নিয়ে

শুধু টের পাই

টের পাওয়া নিয়ে

তুমি যেন দূর কত দূর

নিঃশব্দ সুদূর

যেন দূর আরো দূর।

১৯৯০