Wednesday, March 9, 2011

ছেড়া জিন্স পরা ছেলেটা

ছেড়া জিন্স পরা ছেলেটা

সে তো হেটে যেত পায়ে পায়ে অবজ্ঞায় অনায়াসে
অজানা অচেনা কত মানুষের বিদ্রুপে উপহাসে
কি আসে যায় চোখেমুখে ভরা তাচ্ছিল্যের হাসি
জাহান্নামে যাক সব আজ উনিশশো ছিয়াশি!

২৫ বছর পরে সেই একই পথে আবার সে হেটে যাওয়া
হাটু বরাবর ছেড়া জিন্স আজ এটাই চলতি হাওয়া
কেউ বলবেনা কিছু, ভাববেনা অতশত
এই দেশ এই কালে আর নয় অন্তত।

অনেক যত্নে পোষাক এখানে কোথাও ওখানে ছিন্ন
তার মানে নয় ঝাঁকের মাঝে তুমি যে কিছুই ভিন্ন
এই দেশ এই কালে আর নয় অন্তত।

এত দিন শেষে, এতটাই আসা, এটুকুই পথপাড়ি!

আমাদের ভাঙ্গা কত যে পাহাড়, কত বন্ধুর কাল
কত যে বিঘ্ন বিপরীত স্রোতে আমাদের হাতে হাল
আমরা বিজয়ী কৌরবনাশে মত্ত জয়োল্লাসে
আমরা নায়ক আমাদেরই হাতে গড়া ইতিহাসে .........

কত সহজেই দলে ভেড়া এই আমাদের অবশেষে!

(২০১১/০৩/০৫)



The Boy with Green Hair

As he walked by
strangers screamed abuse
putting a smile on his face
it's 1978 god damn it!

32 years later, on this same streets
green hair is now in vogue
no body hurls abuse at u
Not anymore!

just 'cause u wear your hair green
doesn't mean u r a weirdo
Not anymore.

that's how far we have come!

We turned the corner
We have overcome
We won our War
We made history......

We fitted in!

আপনারাই তো

(নির্মলেন্দু গুন ও আবুল হাসানের উদ্দেশ্যে)

আপনারাই তো শেষ কবি
আকন্ঠ সময়ের বিষজ্বালা, মন্বন্তর ভরা ভুল
মুছে যায় জেনেও তবু শব্দ-মন্থনে উন্মূল
ক্ষ্ণণিকের ঢেউয়ে আঁকা সাধ্যমত ছবি।

একজন তো বেচেই গেলেন, যাকে বলে মরে বাঁচা
অনঙ্গ দুচোখে অন্যজন কবিতাকেই গরীয়সী জেনে স্বর্গাদপি
মাঠে ফুটপাতে অক্ষরে অক্ষরে লেখেন বসন্তের চিত্রলিপি
গৃহত্যাগী লক্ষীর শোকে গেয়ে যাওয়া এক অন্ধ লক্ষীপ্যাঁচা।

মানুষ হতে চেয়ে শেষাবধি কবি হওয়া, হয়ে যাওয়া ইতিহাস
ছিলনা সহজ কোনোদিন, কিছুতো জানিনি কিছুতো বুঝিনি এসবের
সব জেনে শুনে তবু সব সয়ে নিতে হয় জানি আমাদের, কবিদের
আছে কি আজো তবে মানুষ ভেবে সাপ দেখলেই জাপটে ধরার সাহস?

যা কিছু মনে নেই তার সুখে শিশুর মত হাত পা মেলে
কুহেলী মাঠের প্রান্তরে জেনে মানুষ সে বড় একা
বেদেনীর সাপের খেলায় যখন ফুরোয় রুপোর টাকা
আজ কি তবে জুড়োয় গা' বাংলাদেশে বৃষ্টি এলে?

"যাবিই যদি থামিস কেন যাবার যদি যাবি"
বলে আজীবন চলে গেল জীবন কি তবু জানা হল নাতো
না জেনেই মিশে গিয়ে জলের রঙের সাথে খাপ খাওয়া সুতো
আপনারা, আপনারাই তো একমাত্র কবি।

২০১১/০৩/০৯

Sunday, March 6, 2011

জরা

নিজেকে দেখেছি একদিন

ক্রম স্ফুটতর উচ্চারনে

পার হয়ে যেতে বিশাল মাঠ

হারাতে হারাতে লালরঙা এক প্রজাপতির পিছনে

-ধরবই, ধরবই।

দৃঢ়বদ্ধ হাত খোলেনি সেদিন।


ক্ষুদ্র আমি এখন অনেক বড়

সেই বীজ মহীরূহ প্রায়

বীজেরা ছড়িয়ে পড়ে

মহীরূহ শেকড়ে অস্তিত্ব গাড়ে।

বৃক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়।


বৃদ্ধ নই তবু নিজেকে দেখেছি ভেবে

অবিকল বৃদ্ধ সেই

যে জেনেছে নিজ মৃ্ত্যুক্ষন

তবু নির্বিকার শান্ত

এগোবে না, পালাবেনা। না না

ওঠে আর্তনাদ ভয়ংকর

তবু বুক চিরে বের তো হয়না।


সেই বৃদ্ধ যেন আমি

যে ঘোষিত মৃত এই

সকালে যখন রাতের নক্ষত্র জ্বলে

মানুষের চোখের তারায়

নেমে এসে মৃত্তিকার পৃথিবীতে।

উত্তোলিত দুইবাহু - তাতে

সমর্পনের ভঙ্গিমা নিয়ে

-আত্মসমর্পন?


শেষতম অস্ত্র তো বিশ্বাস

সেটুকু হারিয়ে ফেলে

দু’হাতের তালু আজ প্রসারিত

গ্লানিময় ধুলো নিয়ে

সুর্যাস্তের দিকে।

কখনো কি মুষ্টিবদ্ধ ছিল

প্রশ্ন প্রানপণ

তবু সুর্য ডুবে গেছে

উত্তরটুকু না দিয়ে

ঘৃনায় লজ্জায়।


এত রক্ত, এত কালো দুই হাতে

তবু তবু

অপমানে বেদনায়

এমনকি ক্লান্তিতেও

আঙ্গুলগুলো হাতের মৃত্যুহীন ক্লীবতায়

কখনো তো হয়ে ওঠেনা নীল।

১৯৯০

অমোঘ বিস্মরণ

থেমে আসে বৃষ্টির শব্দ।

অতি তীব্র সংবেদনে

বুঝতে পারি এই নিরবে

জলাঙ্গিনী মেঘের দিনে।


তোমাদের থেকে আরো দূরে

যখন ফিরেছি

নিজস্ব তৃষ্ণার স্বাদ নিয়ে

একাকী নির্জনে।


একটা দুটো সমস্ত মেঘ

এক আকস্মিক অন্তর্বিষে

নীল হয় ঘন, আরো নীলে

ঘন কৃষ্ণ নীলাক্রোশে।


এবং অনেক জোয়ার

অনেক ভাটার ব্যবধানে অবশেষে

অমোঘ উপসংহার – বিস্মরণ।

১৯৮৯

মানুষ একাকী অবিরত

কত কাছে থেকে কত দূরে

মানুষ একাকী অবিরত

অবিছিন্ন নির্বাসনে গত।

প্রতিমুহুর্তে সুদুরগামী।


দুহাতে স্পর্শনে অনুভূত অবয়বে

জড়- অনুসৃত যান্ত্রিকতা

প্রতি প্রতিটি নিত্য মুহুর্তে রিক্ত-রিক্তমান,

ক্ষয়িষ্ণু স্মারকস্বরূপ ত্যক্ত

ইতিমধ্যে আত্মদগ্ধ

নির্জীব কাঠামো ধ্বংসাবশেষ।


অন্তর্হিত জন্মজৈবস্পন্দ;

প্রান কতদুর?

বাতাসের ওপারে সমুদ্র – সমুদ্রের জলস্পর্শ

সমুদ্রজ জল ক্রন্দন;

মধ্যবর্তী ব্যবধান ঘনাট বাতাস

- অপ্রতিসারী, নিরেট।


১৯৮৯

সন্ধান

তৃষ্ণার থেকেও বহুদূরে এই

জলের সন্ধান,

তোমাদের থেকে আরো দূরে

একাকী নির্জনে।

একাকী নিরন্তে।


সাধারণ অভিমুখে যাত্রাপথ সে এক

গতায়ু কালের স্মারক প্রতিজ্ঞা।

তখন নিরক্ত মৃদু সকালের

আনন্দিত হেটে যাওয়া লক্ষ্যহীন,

সে সমস্ত বিগত, বিগত সৌরপথে,

অন্তর্বতী ব্যবধান – শতশত

জোয়ার এবং ভাঁটা।


মধ্যাহ্নের মুখোমুখি। এখন দুচোখে

ছিন্নমস্তা স্মরণের কঙ্কালদেহ

বহুদূরে রেখায়িত অসৃষ্ট অজাত।

তৃষ্ণা নিয়ে জোয়ারে জোয়ারে

বিছিন্ন প্রভায়

ক্রমেই বিচ্ছিন্নমান এই

ক্রান্তিকালে মৃদুতা অসহ।


“জ্বলে ওঠ, জ্বলে ওঠ, তীব্র – তীব্র হও

হন্তারক হও

একাকী জগতে অপূর্ন অতএব

অশেষ হও”’

শুনিতো চতুর্দিকে উদীচী, প্রতীচ্যে, প্রাচ্যে

এবং গহন গভীরে নিজের।

১৯৮৯/০৯/০৯

ভিন্ন স্বর, ভিন্ন চোখ

চোখে পড়ালেই চোখে পড়ে

জেগে থাকা আর্বতনে

দুচোখ ঘোরালে – সব কিছু,

নিদেন অনেক কিছু।


ভাবা যায় – নদী আর

নক্ষত্রের রাত পরস্পর সমরূপ

সমরূপ গন্তব্যহীন সড়ক।


খোয়া ভাঙ্গা রক্তপান্ডুর আকাশে

মনে করে নেয়া সম্ভব

ছিন্ন যত্ন সড়কের সুরকি এবং ইটের

বিক্ষত সঞ্চয়

অযাচিত, অন্ধ।


রাত ছেয়ে অন্ধকার কিংবা মেঘের প্রলেপ

আপাতঃ দৃষ্টিতে যাই মনে হোক

এই বিষণ্ণ গোধূলি

ভেবে নেওয়া সম্ভব

এরা সব সব এই মেঘের কঙ্কাল সব

একদা প্রলয়ী দানব ছিল

আজ মৃত স্রোত ক্ষীয়মান বিংশশতাব্দীতে


ভাবলেই ভাবা যায়

উল্লসিত আয়োজনে

নক্ষত্রেরা শুধু,

স্রোতের আবর্তে জ্বলে ওঠা স্ফুলিঙ্গ হঠাৎ,

সংঘর্ষে নিরত সৃষ্ট।

সযত্ন মুহুর্তশুদ্ধ উল্টে আনে দ্বিতীয় আরেক

মুহুর্তের সৃষ্টির জঙ্গল।


সমস্তই ভাবনার বিষয়

মনে আসে মনে আসে

হওয়া সম্ভব। স্ফুট অতি।


সাধারণ মনে আসা, সাধারণ সব।

সাধারণ চিন্তা, চেতনার বহিরঙ্গ

প্রেরণার সজ্জা।


ভিন্নস্বর নেই

ভিন্নমত ভিন্ন দৃষ্টি নেই

অন্য পোষাক নেই কারো

পেক্ষাপট নেই কোনো।

ভিন্ন স্বর নেই

ভিন্ন চোখ নেই।

১৯৮৯