(এক)
বিভ্রান্ত দিবস কাটে
হাতুড়ির শব্দ শুনে অনন্তর
এপারে কখনো ভেসে আসে জলে হাতের কাঁকন
ধ্বনি নিয়ে ঠক্ ঠক্ ঠকাস ঠকাস।
ভেসে আসে এপারে আমার।
হাতুড়ির শব্দ ওপারে,
ওপারে শব্দ শুনি
মিলে একাকার তীব্রতর অনুনাদে।
সম্মিলিত প্রতিধ্বনি তারা হৃদপিণ্ডে ওঠায়
স্বতঃসঞ্চালনে জানি রক্ত তরল তবুও
হাতুড়ির শক্তি স্বনিত স্পন্দনে তার।
(দুই)
বেজে চলে পাখীদের কন্ঠ
পৃথিবীর কোলাহল, চলিষ্ণু দোলক।
বেজে বেজে সমস্ত আওয়াজ
থেমে থেমে থেমে গেছে।
সেসব ছাপিয়ে এক ভাঙ্গনের শব্দ
কান পেতে শোনা যায়
সুচেতন আঘাতে আঘাতে
নতশীর্ষ আজ প্রতিষ্ঠিত বৃক্ষ
ভেঙ্গে ধুলোছাই।
শুধু বৃক্ষ পতনের প্রতিধ্বনি নাচে।
(তিন)
অন্ধকার পট ক্রমে আরো
অন্ধকারে জমে আস্তরিত কৃষ্ণতায়।
দেখা যায়না কোন পুরোনো পাহাড়,
স্বর্ণোজ্জ্বল চাঁদ অথবা কৈবল্যবাদী
মুগ্ধতায় ভরা
বিমুর্ত সুন্দর নীল।
দেখা যায়না কিছু - দেখা যায়না - যায় না।
কেবলি একরাশ শব্দ
শুধু শব্দ, শব্দ, শব্দবিন্দু আঁকা চারিদিকে
স্ফুট এক ধ্বংসের সময় - শুরুর শব্দ।
পটে জেগে ওঠে বিন্দু বিন্দু
ভাঙ্গনের স্বর কণ্ঠে
শানিত হাতুড়ি হাতিয়ার হাতে
যুগের ধারক মানুষের ঢল।
ঢল ঢল ঢলের অরণ্যে নামে ঢল।
ভাঙ্গনের রেখা টানি পটজুড়ে দ্রুত হাতে
বাতাসে বাতাসে শুঁকি ভাঙ্গনের গন্ধে
প্রত্যাসন্ন গড়নের দিন।
১৯৯১
No comments:
Post a Comment